শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

নানা সমস্যায় জর্জরিত কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স 

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি

নানা সমস্যায় জর্জরিত কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স 

যশোরের কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা নানা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও বহিরাঙ্গন আবর্জনায় ভরে থাকে। হাসপাতাল চত্বরে থাকা গভীর নলকূপটি নষ্ট। জেনারেটর থাকলেও সেটি চালু করা হয় না। বিদ্যুৎ চলে গেলে অন্ধকারে থাকতে হয় রোগীদের। এক বছর ধরে অ্যাম্বুলেন্সের চালকও নেই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেয়ার জন্য রোগীদের দীর্ঘ লাইন। আর অন্তর্বিভাগে রোগীদের ভিড়। শয্যা সংকুলান না হওয়ায় বারান্দায় বিছানা পেতে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, মেঝে, সিঁড়ি, বারান্দায় যত্রতত্র ময়লা ফেলে রাখা হয়েছে। এমনকি রোগীদের বিছানার পাশেও আবর্জনা রয়েছে। পুরুষ ওয়ার্ডের উত্তর পাশের একটি শৌচাগারে পানি ভর্তি। শৌচাগারের দরজা খুললেই দুর্গন্ধ বের হচ্ছে।

বিদ্যুৎ না থাকলে ফ্যান-বাতি বন্ধ হয়ে যায়, ঝড়বৃষ্টি হলে মধ্যেমধ্যে সারারাত বিদ্যুৎ থাকে না। রোগীদের অভিযোগ শৌচাগারের দরজা খুললেই দুর্গন্ধ বের হয়। শৌচাগার পরিষ্কার করা হয় না।

হাসপাতালের বারান্দায় চিকিৎসা নেয়া জাহানপুর গ্রামের আবদুল গণি বলেন, বিদ্যুৎ না থাকলে ফ্যান-বাতি বন্ধ হয়ে যায়, তখন অসম্ভব কষ্ট হয়। ঝড়বৃষ্টি হলে মধ্যেমধ্যে সারারাত বিদ্যুৎ থাকে না। হাসপাতালে বিশুদ্ধ পানিরও সংকট আছে। হাসপাতালের ভেতরে গভীর নলকূপটি নষ্ট। পানি আনতে হয় দূর থেকে। নয়তো পানি কিনে খেতে হয়। 

কর্তব্যরত নার্সরা এ সময় বলেন, হাসপাতালের জেনারেটর আছে। কিন্তু তা চালানো হয় না। বিদ্যুৎ চলে গেলে তাদেরও ভোগান্তি পোহাতে হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুর ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে মনিরামপুর, সাতক্ষীরার কলারোয়া ও তালা উপজেলা থেকেও রোগী আসেন। হাসপাতালটি কমিউনিটি ক্লিনিক সেবায় একবার দেশসেরা, স্বাস্থ্যসেবায় একবার দ্বিতীয় ও দুবার তৃতীয় হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।

মনিরামপুরের দীপ্ত চক্রবর্তী বলেন, সমপ্রতি তার এক আত্মীয় গুরুতর অসুস্থ হয়ে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার প্রয়োজন হওয়ায় তিনি জানতে পারেন, হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের চালক নেই। এ বিষয়ে হাসপাতালের কর্মকর্তারা বলেন, চালক না থাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি এক বছর ধরে গ্যারেজে পড়ে আছে। 

স্থানীয় লোকজন বলেন, কেশবপুর থেকে খুলনায় যাওয়ার জন্য সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে ভাড়া নেয়া হয় ১ হাজার ২০ টাকা। সেখানে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে ভাড়া নেয়া হয় ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, এক বছর ধরে অ্যাম্বুলেন্সের চালক নেই। তার গাড়ির চালক দিয়ে জরুরি প্রয়োজন মেটানো হচ্ছে। জেনারেটর আছে কিন্তু তেলের বরাদ্দ না থাকায় সেটি চালানো যায় না। গভীর নলকূপটিতে এক বছর ধরে পানি উঠছে না। 

অন্যদিকে ছয়জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর বিপরীতে মাত্র দুজন কর্মরত। তাদের দিয়ে পুরো হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন রাখা কঠিন। এসব বিষয়ে তিনি আগেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন, আবারও বলবেন।

টিএইচ